গৌরীপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২২, ১০:৫৩ অপরাহ্ন | জনদুর্ভোগ

শামীম খান ( গৌরীপুর, ময়মনসিংহ):
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বাহাদুরপুর ফিরোজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিচ্ছেন শিক্ষকরা। পাঠদান চলাকালীন অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ছাদের পলেস্তার খসে পড়ে শিক্ষার্থীদের ওপর। এই অবস্থায় যেকোন মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯০ সালে উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত হয় বাহাদুরপুর ফিরোজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রথম দিকে টিনশেড ঘরে পাঠদান হলেও ১৯৯৯ সালে বিদ্যালয়ের দ্বিতল ফাঊন্ডেশনের একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ কাজ শেষে ভবনের তিনটি কক্ষে পাঠদান চালু হয়। কক্ষ সংকটের কারণে ভবনের সিঁড়ি কক্ষে টিনের চালা বানানো হয় অফিস কক্ষ। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সহ চারজন শিক্ষক রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭৭ জন।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবনের পাঠদান কক্ষের ছাদ, বারান্দা ও দেয়ালের বিভিন্ন অংশের পলেস্তার খসে পড়ছে। ফাটল দেখা দিয়েছে দেয়াল, ভিম ও ছাদে। ছাদ ও ভিমের পলেস্তার খসে রড বেরিয়ে এসেছে। ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় তিনটি পাঠদানের কক্ষের মধ্যে একটি কক্ষে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। কিন্ত ভবন সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় ২০২১ সালে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতের টাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পাশে এক কক্ষ বিশিষ্ট আধাপাকা পাঠদান কক্ষ নির্মাণ করা হয়।
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা বলেন, ভবনে ফাটল দেয়ায় পাঠদানের সময় বেঞ্চে বসে থাকতে ভয় করে। অনেক সময় ছাদের পলেস্তার খসে শরীরে পড়ে। তাই সবসময় আমরা আতঙ্কে থাকি।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, চলতি অক্টোবরের ১৮ তারিখ পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান কক্ষে ছাদ ও ভিমের পলেস্তার খসে পড়ে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ভয় পেয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের বের করে বাড়ি নিয়ে যায়।
অভিভাবক আব্দুল গনি বলেন, বিদ্যালয়য়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতঙ্কে থাকি। দুর্ঘটনার শঙ্কায় অনেক অভিভাবক ভয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ পরিবেশে পাঠতানের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ জরুরী।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জুলহাস উদ্দিন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে পাঠদানের সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় কাজ করে। তারা পাঠদানে মনোযোগী হতে পারে না। বিষয়টি শিক্ষা অফিসে জানানো হয়েছে। তবে ভবন নির্মাণে এখনো কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পাঠদানের জন্য বিদ্যালয় মাঠে নতুন এককক্ষ ভবন করা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য শিক্ষা কমিটির সুপারিশ সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি এই অর্থ বছরেই ভবন নিমার্ণ কাজ শুরু হবে।