ইসলামাবাদে ‘বাংলাদেশ উৎসব’ আয়োজন

 প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৩, ০৪:৪১ অপরাহ্ন   |   আন্তর্জাতিক

ইসলামাবাদে ‘বাংলাদেশ উৎসব’ আয়োজন

ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন গত ০৩ জুন ২০২৩ তারিখে অত্যন্ত সাড়ম্বর ও জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে “বাংলাদেশ উৎসব” আয়োজনের মাধ্যমে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী’, ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ এবং ‘রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী’ উদযাপন করেছে। সম্পূর্ণ বাঙ্গালি ধারায় আমন্ত্রিত অতিথিগণকে সম্ভাষণ, বঙ্গবন্ধু ও বিশ্ব শান্তি প্যাভিলিয়ন, ক্রীড়া অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং হরেক রকম সুস্বাদু বাংলাদেশি খাবার দিয়ে আপ্যায়ন ছিল এই উৎসবের মূল আকর্ষণ। এ উপলক্ষে সমগ্র দূতালয় আলোকমালা, রংবেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন, ঘুড়ি, ফুল ও ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি লোকপণ্য দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়।

উচ্চ পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাগণ, সঙ্গীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সুশীল সমাজ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, বাংলাদেশী কমিউনিটি সদস্য, পাকিস্তানে প্রশিক্ষণরত বাংলাদেশের সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ ও হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যগণসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রায় দুই শতাধিক অতিথি এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পাকিস্তানে বাংলাদেশের মান্যবর হাইকমিশনার জনাব রুহুল আলম সিদ্দিকী কর্র্তৃক ‘বঙ্গবন্ধু ও বিশ্ব শান্তি প্যাভিলিয়ন’ এর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ উৎসবের শুভ সূচনা হয়। প্যাভিলিয়নে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এর বাংলা, ইংরেজি ও উর্দু সংস্করণ, কারাগারের রোজনামচা, Prison Diaries সহ বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনের ওপর বই, আলোকচিত্র ও পোস্টার প্রদর্শন করা করা হয়।    

আমন্ত্রিত অতিথিদের বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে হাইকমিশনার স্বাগত বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব শান্তির ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদের সর্বোচ্চ সম্মান জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি পদক প্রাপিÍ তাঁকে শুধু বিশ্বের প্রথম সারির নেতৃত্বের কাতারেই অধিষ্ঠিত করে নাই, বিশ্ববাসীর চোখে তাঁকে হিমালয়সম উচ্চতায় অধিষ্ঠিত করেছে এবং বাংলাদেশ ও বাঙ্গালি জাতিকে করেছে গৌরবানি¦ত। পহেলা বৈশাখ বাঙালির সম্প্রীতি ও মহামিলনের দিন। এদিন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণে নব অঙ্গীকারে। কবিগুরু  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর  ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল  ইসলামের কর্মময় জীবনের ওপর আলোচনায় তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা এবং কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীন অবিভক্ত ভারতের বিদ্রোহী কবি।

বিশেষ অতিথি মানকি শরীফের পীর এর পৌত্র পীরজাদা মুহাম্মদ আমিন তাঁর বক্তব্যে ১৯৫২ সালে চীনে অনুষ্ঠিত The Peace Conference -এ পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলে তাঁর পিতামহ মানকি শরীফের পীর এবং বঙ্গবন্ধুর অংশগ্রহণের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের জাতির পিতা ছিলেন না, তিনি সারাবিশ্বের নিপীড়িত, নির্যাতিত, মুক্তিকামী মানুষের নেতা ছিলেন।



অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে দূতালয়ের সবুজ চত্বরে আমন্ত্রিত অতিথি ও হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যবৃন্দের অংশগ্রহণে বেশকিছু প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। এরপর এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের ছেলেমেয়েরা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সাজপোষাকে সুসজ্জিত হয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা আবৃত্তি, রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীত ও  নাচ পরিবেশন করে। এছাড়াও প্রবাসী বাংলাদেশি অতিথিগণ সংগীত পরিবেশন করেন।  

অনুষ্ঠান চলাকালীন আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে বাংলাদেশি চা, লাচ্চি (মাঠা) ও লেবুর শরবত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে হরেক পদের ভর্তা, মাছসহ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রচলিত খাবার দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়।

উপস্থিত অতিথিগণ অনুষ্ঠানটির ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং আগামীতেও এরকম অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুরোধ জানান ।


আন্তর্জাতিক এর আরও খবর: