সরকারকে বোবা ভূতে ধরেছে : আলাল

অন্তর্বর্তী সরকারকে বোবা ভূতে ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি বলেন, ‘বোবা ভূতে ধরলে অনেক কিছু করতে ইচ্ছা করে কিন্তু করতে পারে না। যতগুলো সংস্কার কমিশন হয়েছে তারা কেউ এখন পর্যন্ত কোনো রূপরেখা দিতে পারেনি। দশ মাস হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হতে লেগেছিল ৯ মাস। আর একটা রূপরেখা দশ মাসেও দিতে পারছেন না!’ রোববার (১ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

আলোচনা সভায় মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ করতে গিয়ে প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। তারেক রহমান সে প্রতিহিংসার শিকার এখনো হচ্ছেন। একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী কর্তৃক তারেক রহমানের জীবন হানির ছক আঁকা হয়েছিল, সে শীর্ষ সন্ত্রাসী এখন জেলে।’ তিনি বলেন, ‘এই জুলাই অভ্যুত্থানে ১৬৮ শিশু নিহত হয়েছে। এই অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন তাদের তারেক রহমান ছাড়া বেশি খোঁজখবর কেউ নিয়েছেন বা সরকারের তৎপরতা রয়েছে তা দেখা যাচ্ছে না। তারপরও মনে হয় এ সরকারকে বোবা ভূতে ধরেছে। বোবা ভূতে ধরলে অনেক কিছু করতে ইচ্ছা করে কিন্তু করতে পারে না। পাশে যে শুয়ে থাকে সে শুধু গোঙানির শব্দ পায়। আমরা এ সরকারের কাছে গোঙানি ছাড়া আর কিছুই শুনতে পাচ্ছি না। এ সরকার নিজেরা কী করবে তা জানে না।’

প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, দেশ পরিচালনা করা আর এনজিও চালানো এক কথা নয়। সারা বিশ্বের প্রশংসা পাওয়া আর বাংলাদেশের মানুষের প্রশংসা পাওয়া এক না। মাত্র আসলেন আবার যাবেন বৃটেনে পুরস্কার আনতে। একটার পর একটা পুরস্কার আনছেন। শেখ হাসিনাকে এক সময় দেখেছিলাম তার স্বামীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিদেশ থেকে অনেক ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে এসেছিলেন। এই ডিগ্রি ধুয়ে কি আমরা পানি খাবো? দ্রব্যমূল্য কমাতে পেরেছেন? আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছেন? মুক্তিযুদ্ধের যে মূল চেতনা- সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার- এসবের জন্য কোনো কর্মসূচি কি এখনো দিয়েছেন?’

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার অন্তর্বর্তী আচরণের মধ্যে থাকেন, স্থায়ী কোনো আচরণের মধ্যে যাওয়ার এখতিয়ার আপনাদের নেই। এটা মাথায় রেখে মানুষের যে প্রত্যাশা, একাত্তরের যে চেতনা এবং ৭১ থেকে আজ পর্যন্ত যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে সেটার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। শহীদ জিয়ার সৈনিকরা আন্দোলন করেছে, তাদের প্রতি সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করুন।’ সংস্কার কমিশন প্রসঙ্গে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘যতগুলো সংস্কার কমিশন হয়েছে তারা কেউ এখন পর্যন্ত কোনো রূপরেখা দিতে পারেনি। দশ মাস হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হতে লেগেছিল ৯ মাস। আর স্বাধীন দেশের একটা রূপরেখা দশ মাসেও দিতে পারছের না! মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে আপনাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। যারা রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন- তাদের জীবন থেকে আপনাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। দেশ পরিচালনা করতে তাদের সহযোগিতা নেন, তাহলে হয়তো দেশে শান্তি আসবে।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাত। এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবি আব্দুল হাই শিকদার, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।