দেশ সেরা হাউজিং সোসাইটি বাংলাদেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছে

 প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০১৯, ০৫:৩১ অপরাহ্ন   |   সফলতার গল্প

দেশ সেরা হাউজিং সোসাইটি বাংলাদেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছে

দেশ সেরা হাউসিং সোসাইটি বাংলাদেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছে বলে মন্তব্য করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য জনাব মেহের আফরোজ চুমকি। গত মঙ্গলবার দি মেট্রোপলিটান খ্রীষ্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লি:-এর ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (রুবি জুবিলি) উদ্যাপন উপলক্ষে গেস্ট অব অনারের বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরার ৪ নং অডিটোরিয়ামে (নবরাত্রি) মহাআড়ম্বরপ‚র্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই জুবিলি উদ্যাপিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরীফিকেশন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাতিকানের সাংসদীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত মহামান্য কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’ রোজারিও, সিএসসি-এর প্রতিনিধি বিশপ থিওটোনিয়াস গমেজ, সিএসসি। গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য জনাব মেহের আফরোজ চুমকি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট গেøারিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি, সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক জনাব মোঃ আছাদুজ্জামান, ঢাকা বিভাগের সমবায় কার্যালয়ের যুগ্ম-নিবন্ধক জনাব মোঃ লুৎফর রহমান, হাউজিং সোসাইটির সেক্রেটারি ইমানুয়েল বাপ্পী মন্ডল, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও, এশিয়া প্যাসিফিক এলায়েন্স অব ওয়াইসিএমস ও ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গমেজসহ আরো অনেক রাজনৈতিক ও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই দি এমসিসিএইচএস লি:-এর চেয়ারম্যান আগষ্টিন পিউরীফিকেশন বলেন, আজ থেকে ৪০ বছর আগে ২৭ জন সদস্য-সদস্যা মিলে এই যে সোসাইটি শুরু করেন তাঁদের নিকট আজ আমরা ঋণী। তাঁদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ত্যাগ ও ভালোবাসার ফসল আজকের এই ১৩শ কোটি টাকার হাউজিং সোসাইটি। একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য নিজেদের বাড়ী বন্ধক রেখে অর্থ যোগান দেওয়ার ঘটনা ইতিহাসে বিরল। আমরা আপনারা সেই সোসাইটির গর্বিত সদস্য-সদস্যা। রুবী জুবিলির এই মাহেন্দ্রক্ষণে আপনাদের অভিনন্দন, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

গেস্ট অব অনারের বক্তৃতায় সংসদ সদস্য জনাব মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, জীবন ক্ষণস্থায়ী। এই স্বল্প সময়ে আমরা যদি মানুষের জন্য কিছু করে রেখে যেতে না পারি তবে জীবন অর্থহীন। দি এমসিসিএইচএস লি: ও এর সুযোগ্য চেয়ারম্যান সম্পর্কে তিনি বলেন, মি. আগষ্টিন পিউরীফিকেশন কিছুদিন আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সমবায়ী, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সম্মাননা ও নেপাল-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছেন। এতে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল হয়েছে। দেশের সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এই প্রতিষ্ঠান দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছে। এই প্রতিষ্ঠান যেমন সকল সদস্য-সদস্যাদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছেন তা যেন অব্যাহত থাকে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশপ থিওটোনিয়াস গমেজ বলেন, সমবায় অঙ্গনে হাউজিং সোসাইটির অবদান অসামান্য। স্বল্প আয়ের মানুষদের আবাসনের ব্যবস্থা করার জন্য তিনি বর্তমান বোর্ডের নিকট আহ্বান জানান। এছাড়াও সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি, মোঃ আমিনুল ইসলাম, মোঃ আছাদুজ্জামান, মোঃ লুৎফর রহমান, নির্মল রোজারিও, বাবু মার্কুজ গমেজ প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। বর্ণিল এই আয়োজনের সাথে ছিল প্রাক্তন কর্মকর্তা, খ্রিস্টান সমাজের বীরমুক্তিযোদ্ধা, বিসিএস ক্যাডারসহ মোট ১৬টি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তিদের সোসাইটির পক্ষ থেকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

বিকেলের অধিবেশনে বিদ্যা সিনহা মিম, কনকচাঁপা, অনিমা মুক্তি গমেজ, প্রিয়াংকা র‌্যাচেল, শিপ্রা প্যারিশ, কিশোর ক্লডিয়াস, মীরাক্কেলের আবু হেনা রনি, সোলস ব্যান্ডসহ আরো অনেক তারকাদের উপস্থিতি ও পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। নৃত্যশিল্পী মৌ-এর দলীয় নৃত্যের মাধ্যমে সকালে অনুষ্ঠান শুরু হয়। জুবিলির এই আনন্দ উৎসবে প্রায় ৭ হাজার সদস্য অংশ নেয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সোসাইটির সেক্রেটারি ইমানুয়েল বাপ্পী মন্ডল।
উল্লেখ্য, ১৯৭৭ সালের ১৪ এপ্রিল ঢাকা শহরের আবাসন সমস্যা দূরীকরণে ২৭ সদস্য মিলে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানের এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ২১ হাজার এবং সম্পদ-পরিসম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৩শ কোটি টাকা। দি এমসিসিএইচএস লি: বাংলাদেশে একমাত্র হাউজিং সোসাটিই যারা ভাড়ার টাকায় সদস্যদের ফ্ল্যাটের গর্বিত মালিক হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ প্রদান করছে।

ভবিষ্যতে জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সকলের জন্য হাউজিং সোসাইটি বিভিন্ন মেগাপ্রকল্প নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। এরমধ্যে শপিংমল, আবাসিক হোটেল, সুপার স্টোর, আরও ১০০০ পরিবারের জন্যে জমি বরাদ্দ, ২০২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে আরও ৩০০০ পরিবারের জন্য জমির ব্যবস্থা, দেশের বাইরে সেবাকেন্দ্র খোলা (যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা), এটিএম বুথ চালু করা, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করা, ইট ভাটা নির্মাণ, আধুনিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, রিসোর্ট ও ট্রেনিং সেন্টার চালু করা, কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণসহ আরো অনেক প্রকল্প।

সফলতার গল্প এর আরও খবর: