যুক্তরাষ্ট্রে ইঞ্জিনিয়ার ফেরদৌসের গবেষণা পেয়েছে সেরার স্বীকৃতি

 প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৩ অপরাহ্ন   |   সফলতার গল্প

যুক্তরাষ্ট্রে ইঞ্জিনিয়ার ফেরদৌসের গবেষণা পেয়েছে সেরার স্বীকৃতি


প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার ছাত্র/ছাত্রী আমেরিকা-ইউরোপে পাড়ি জমান উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের জন্য। অনেকেরই লক্ষ্য থাকে নিশ্চিন্ত পশ্চিমা দুনিয়ার মায়ায় জড়িয়ে সুন্দর জীবন গড়া। খুব কমই উচ্চতর শিক্ষায় যথাযথভাবে টিকে থাকেন। তাদের চেয়েও অনেক কম সংখ্যায় বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় নাম লেখাতে পারেন। ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে বাংলাদেশের পিএইচডি গবেষক মো. ফেরদৌস ওয়াহিদ এই অল্প কয়েকজনের মধ্যেই স্থান করে নিয়েছেন। 

ওয়াকিং কলাম (Walking Column ) নিয়ে করা তার গবেষণা Structural Engineers Association of Ohio (SEAoO) কর্তৃক প্রদত্ত Graduate Education Award 2025 অর্জন করেছেন। প্রতিযোগিতায় প্রতি বছর কেবলমাত্র একজন গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীই এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার অর্জন করতে পারে, কঠোর বিচার-বিশ্লেষণের পর এই বছর সেই মর্যাদা অর্জন করেছেন ফেরদৌস। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির সিভিল, এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওডেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পিএইচডি শিক্ষার্থী ফেরদৌস তার গবেষণা কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এ পুরস্কার লাভ করেন। 

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওহাইওর কলম্বাসে অবস্থিত The Blackwell Inn নামক ৪ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত বার্ষিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন American Concrete Institute (ACI)-এর সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রফেসর Kenneth Clark Hover এবং William E. Rushing, SEAoO প্রেসিডেন্ট Benjamin J. Van De Weghe সহ খ্যাতনামা প্রকৌশলীরা। আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরদৌসের হাতে সেরা গবেষকের সনদপত্র ও প্রাইজমানি তুলে দেন SEAoO প্রেসিডেন্ট। কনফারেন্সে আগত সবাই ফেরদৌসের গবেষণার প্রশংসা করেছেন ও তাকে অভিনন্দ জানিয়েছেন। বিশেষ করে ACI এর সাবেক প্রেসিডেন্টদ্বয় ফেরদৌসের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করেছেন।

স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব ওহাইও'র (Structural Engineers Association of Ohio (SEAoO)  মর্যাদাপূর্ণ গ্রাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পাওয়া বাংলাদেশের মো. ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ‌আমি মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তাঁর অশেষ রহমতেই আমি এ পুরস্কার জয় করতে পেরেছি। ওহাইয়োতে অধ্যয়নরত সারা বিশ্বের মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে সবার সেরা হওয়াটা সত্যিই অনেক আনন্দের। আমি বিশ্বের অন্যতম একটা মঞ্চে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরতে পারায় নিজেকে ধন্য মনে করছি। ফেরদৌস নরসিংদীর জামেয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসা থেকে ২০০৫ সালে দাখিল পাস করেন। এরপর ২০০৯ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেন ঢাকা পলিটেকনিক থেকে, ও ২০১৫ সালে বিএসসি করেন ডুয়েট থেকে। এরপর সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ে এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে কর্মরত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। 

গবেষণা করে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি পেয়েই আমেরিকার বিখ্যাত স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে কাজ করার প্রস্তাব পেয়েছেন ফেরদৌস। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আগত সেই ফার্মের প্রজেক্ট ম্যানেজার সরাসরি তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব জানান। ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে ফেরদৌস Professor Halil Sezen ও Dr. Ali Nassiri এর অধীনে পিএইচিড করছেন। তার গবেষণার বিষয় হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সমন্বয় ঘটিয়ে কাঠামোর ডিজাইন আরও সহজ ও দক্ষ করা।

সফলতার গল্প এর আরও খবর: