হঠাৎ প্রকাশ্যে নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী, বললেন ‘দেশ ছেড়ে পালাব না’
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০১ অপরাহ্ন | আন্তর্জাতিক

জেন-জি আন্দোলনের মুখে চলতি মাসের শুরুতে ক্ষমতাচ্যুত নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সিপিএন–ইউএমএল চেয়ারম্যান কেপি শর্মা ওলি প্রকাশ্যে এসেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তিনি দেশ ছেড়ে পালাবেন না।শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভক্তপুরের গুন্ডুতে দলের যুব শাখা আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘আপনারা কি মনে করেন এই ভিত্তিহীন সরকারের হাতে দেশ তুলে দিয়ে আমরা দেশ ছেড়ে পালাব?’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা-ই এই দেশকে সাংবিধানিক মূলধারায় ফিরিয়ে আনব। আমরা দেশকে শান্তি ও সুশাসনে ফিরিয়ে আনব।’
৯ সেপ্টেম্বর বলওয়াটারের সরকারি বাসভবন থেকে পালানোর ১৮ দিন পর এটি ছিল তার প্রথম প্রকাশ্য বক্তব্য। ওই দিন বিক্ষোভকারীরা ভক্তপুরের বালকটে তার ব্যক্তিগত বাড়ি পুড়িয়ে দিলে তাকে সেনা সুরক্ষায় সরিয়ে নেওয়া হয়। নয় দিন সেনা অভ্যর্থনায় কাটিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি গুন্ডুর একটি ভাড়া বাড়িতে ওঠেন।ওলি অভিযোগ করেন, বর্তমান সুশীলা কার্কি সরকার জনগণের ম্যান্ডেট থেকে নয়, বরং ‘ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে’ ক্ষমতায় এসেছে। কোনো ষড়যন্ত্রে তিনি জড়িত ছিলেন না দাবি করে তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘আমি প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীকে কী নির্দেশনা দিয়েছিলাম, সেই রেকর্ড প্রকাশ করুন। সাহস থাকলে জনসমক্ষে আনুন।’তিনি অভিযোগ করেন, সরকার তার নিরাপত্তায় অবহেলা করছে। বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছে—আসুন কেপি ওলির নতুন বাড়ি খুঁজে বের করি এবং আক্রমণ করি। সরকার কী করছে? শুধু দেখছে?’এর আগে সংবিধান দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বার্তায় ওলি দাবি করেন, তার সরকার কখনোই সেনা বা পুলিশের ওপর বিক্ষোভকারীদের গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়নি। তার ভাষায়, ‘বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়েছিল স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে, যা পুলিশের কাছে ছিল না। এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।’গত ৮ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি, অনিয়ম ও বেকারত্ববিরোধী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের গুলি চালানোর পর পরিস্থিতি সহিংস রূপ নেয়। সরকারি হিসেবে অন্তত ১৯ জন নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হন। পরদিন সহিংসতা আরও ছড়িয়ে পড়লে ওলির সরকার পতন ঘটে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, ৮ সেপ্টেম্বরের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশের গুলি চালানোই পরদিন নির্বিচার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কারণ হয়।