শিক্ষক আছেন, শিক্ষার্থী নেই

 প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারী ২০২৪, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন   |   সারাদেশ

শিক্ষক আছেন, শিক্ষার্থী নেই

সঞ্জয় কুলু (শরণখোলা, বাগেরহাট): 

  “শিক্ষক আছেন, শিক্ষার্থী নেই” এমন অভিযোগ রয়েছে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ৭ নং রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে গত ২৪ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নাসরিন নাহার যোগদান করেন। তার যোগদানের পর থেকেই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে  মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এমনকি ওই শিক্ষিকা যোগদানের পর থেকেই অভিভাবকরা তাদের ছোট্ট ছেলেমেয়েদের ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন। যে কারণে বিদ্যালয়টি এখন রয়েছে শিক্ষার্থী শূন্য। এমন খবরে জের ধরে গতকাল রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় ৭ নং রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়  নিয়মিত ২১০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষার্থী শুণ্য প্রতিটি শ্রেণীকক্ষ । খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায় বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও করেননি শিক্ষকরা । সহকারি শিক্ষক কে এম সাহিদুর রহমান ও শারমিন আক্তার বলেন, নাসরিন ম্যাডাম যোগদানের পর থেকেই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসছেনা। এসময় বিদ্যালয়ের পাশে বসবাসকারী অভিভাবক আব্বাস গাজি, মিলন হাওলাদার, স্বপন বিশ্বাস ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রহমান হাওলাদারের সাথে কথা বললে তারা জানান, নাসরিন নাহার একজন বিতর্কিত শিক্ষিকা। তার বিরুদ্ধে নলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মালামাল চুরি করে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। তার মতো একজন বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক যদি এই স্কুলে থাকে তাহলে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া হবেনা। তাই উনি থাকলে তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেন না। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও রাজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নান্না মিয়া হাওলাদার বলেন, গত বুধবার প্রধান শিক্ষক হিসেবে নাসরিন নাহার যোগদান করতে এসে দেখেন বিদ্যালয়ে তালা দেওয়া। এরপর ইউএনও মহোদয়কে বিষয়টি জানানো হয়। পরে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (টিও) নিজে এসেও দেখে গেছেন । এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন নাহার বলেন, ১১০ নং নলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বদলীজনিত কারণে গত ২৪ জানুয়ারি ৭ নং রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করতে এসে দেখেন স্কুলের গেটে তালা দেওয়া। তাই তিনি বাইরে অপেক্ষা করে চলে যান। এর পরদিন সকালে আবার বিদ্যালয়ে এসে বসলে কোনো হাজিরা খাতা পাননি । এমনকি অন্যান্য শিক্ষকরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও করেননি। এবং সেই দিন থেকে  ছাত্রছাত্রীরাও  বিদ্যালয়ে আসছে না। হাজিরা খাতা না থাকায় এখন তিনি  ছুটিও নিতে পারছেন না।  উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, নাসরিন নাহারকে প্রশাসনিকভাবে গত ২৪ জানুয়ারি ৭ নং রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়েছে। এরপর থেকে দেখলাম শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। আজ আবার শুনলাম কোনো উপস্থিতি নাই। এলাকাবাসী দাবি করছেন মহিলা শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়টি সে চালাতে পারবেন না। তাই তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে আসতে দিচ্ছেন না। তবে বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণে রাখছি, যদি তিনি সবাইকে ম্যানেজ করে থাকতে না পারেন তখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সারাদেশ এর আরও খবর: