বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সহায়তা কামনায় ড. ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এমবিই’র চিঠি
প্রকাশ: ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন | ভিন্ন খবর

বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তা কামনা করেছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটি নেতা, শিক্ষাবিদ ও নিউ হোপ গ্লোবালের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এমবিই। এ লক্ষ্যে তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার এমপি’র কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে তিনি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিলেও এখনো সময়সূচি প্রকাশ করেনি। এ প্রেক্ষাপটে একটি মহল সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ড. ফয়েজ উদ্দিন বিশেষভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন ও পূর্ণ রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানান। তিনি মনে করেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তারেক রহমানের সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত সতেরো বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচার আটক এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার মতো গুরুতর অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায়ও কার্যকর জবাবদিহির অভাব রয়েছে।
চিঠিতে তিনি ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এ উদ্যোগ ছিল বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচন নিশ্চিতে এক আন্তর্জাতিক প্রয়াস। কিন্তু সে সময়কার সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয় এবং জনগণের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ভোটার দমন, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহারের কারণে দেশ-বিদেশে সমালোচিত হয়েছিল। যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ২০২৬ সালের নির্বাচনও একইভাবে প্রভাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে, যা জনগণকে মৌলিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করবে।
ড. ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ এমবিই যুক্তরাজ্য সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে চার দফা পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান—
১. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের ফসল। এই নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে যেন কোনো অপশক্তি বানচাল করতে না পারে, সে বিষয়ে গণতান্ত্রিক বিশ্বকে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।
২. অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন আর ফিরে আসতে না পারে, সে জন্য গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক ও সুসংহত করতে হবে এবং রাজনীতিকে কালো টাকার বলয়মুক্ত করে শক্তিশালী নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে।
৩. তারেক রহমানের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন ও পূর্ণ রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. সরকারের প্রতিশ্রুত মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে।
চিঠির শেষে তিনি দৃঢ় বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে, যুক্তরাজ্যের নীতিনিষ্ঠ সহায়তা ও কার্যকর আন্তর্জাতিক ভূমিকা বাংলাদেশের গণতন্ত্র, শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।