প্রযুক্তিবিশ্বকে বদলে দেয়া পাঁচ নারী

 প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০৪ অপরাহ্ন   |   বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

প্রযুক্তিবিশ্বকে বদলে দেয়া পাঁচ নারী

ইতিহাসজুড়ে প্রযুক্তি শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে নারীরা, যা আজকের ডিজিটাল বিশ্ব গঠনে সাহায্য করেছে।


ইতিহাসজুড়ে প্রযুক্তি শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে নারীরা, যা আজকের ডিজিটাল বিশ্ব গঠনে সাহায্য করেছে। নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন থেকে শুরু করে বড় বড় কোম্পানির নেতৃত্ব দেয়া নারীরা প্রতিবন্ধকতা ভেঙে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এবং অনেককে অনুপ্রাণিত করেছে। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট উইমেন ইন টেক এমন কিছু নারীর কথা তুলে ধরেছে, যারা প্রযুক্তি জগতে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছেন



ওয়াই-ফাইয়ের উদ্ভাবক হেডি ল্যামার :

হেডি ল্যামার ছিলেন একজন স্বশিক্ষিত উদ্ভাবক ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। ১৯৪২ সালে তিনি জর্জ অ্যানথেইলের সহায়তায় একটি ‘গোপন যোগাযোগ পদ্ধতি’ উদ্ভাবনের জন্য পেটেন্ট পান। এ প্রযুক্তি মূলত যুদ্ধের সময় রেডিও-নিয়ন্ত্রিত টর্পেডোর (জলযানবিধ্বংসী) দিক পরিবর্তন বা বিভ্রান্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তী সময় এ ধারণা ওয়াই-ফাই, জিপিএস ও ব্লুটুথ প্রযুক্তির বিকাশে অনুপ্রেরণা জোগায়।


বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার অ্যাডা লাভলেস:  

অ্যাডা লাভলেস ছিলেন বিখ্যাত কবি লর্ড বায়রন ও অ্যানা ইসাবেলা-বায়রনের কন্যা। অ্যাডার গণিতের প্রতি প্রতিভা শৈশব থেকেই প্রকাশ পায়। যন্ত্রপাতির প্রতি তার দক্ষতা ও আগ্রহ অ্যাডাকে চার্লস ব্যাবেজের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ এনে দেয়। ব্যাবেজ ছিলেন ‘অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন’-এর উদ্ভাবক। যদিও জটিল যন্ত্রটি কখনো তৈরি করা সম্ভব হয়নি, কিন্তু এর ধারণা আধুনিক কম্পিউটারের মতো ছিল। এ প্রকল্পে কাজ করার কারণে অ্যাডা লাভলেসকে ‘বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার’ হিসেবে গণ্য করা হয়। অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নিয়ে অ্যাডার নোটই অ্যালান টুরিংকে অনুপ্রাণিত করেছিল ১৯৪০-এর দশকে প্রথম আধুনিক কম্পিউটার তৈরির কাজে।


খ্যাতিমান কম্পিউটার বিজ্ঞানী গ্রেস হপার : প্রযুক্তি জগতে গ্রেস হপারের নাম অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। রিয়ার অ্যাডমিরাল গ্রেস এম হপার ছিলেন একজন খ্যাতিমান কম্পিউটার বিজ্ঞানী ও হার্ভার্ড মার্ক-১ কম্পিউটারে কাজ করা প্রথম প্রোগ্রামারদের একজন। তার কাজের ফলেই কোবল (সিওবিওএল) প্রোগ্রামিং ভাষার বিকাশ সম্ভব হয়, যা এখনো ব্যবহার হচ্ছে। ১৯৪৭ সালে তিনি বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার বাগ (ত্রুটি) শনাক্ত করেন।


ইন্টারনেটের জননী রেডিয়া পার্লম্যান :

রেডিয়া পার্লম্যানকে ‘ইন্টারনেটের জননী’ বলে অভিহিত করা হয়। তিনি স্প্যানিং ট্রি প্রটোকল (এসটিপি) পেছনের অ্যালগরিদম উদ্ভাবন করেন। এ অ্যালগরিদম আজকের ইন্টারনেটকে সম্ভব করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তার এ কাজ নেটওয়ার্ককে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংগঠিত হতে ও ডাটা আদান-প্রদান সহজ করতে সাহায্য করে। রেডিয়া পার্লম্যান বর্তমানে ডেল টেকনোলজিসের শাখা ডেল ইএমসির একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছেন। তার কাজ শুধু প্রযুক্তি জগতেই নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের ব্যবহারকে সহজ ও নির্ভরযোগ্য করে তুলেছে।


প্রথম হোম কম্পিউটার ব্যবহারকারী মেরি উইলকস :

মেরি উইলকস একজন সাবেক কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও লজিক ডিজাইনার। তিনি বৈপ্লবিক উদ্ভাবন লিংকের (ল্যাবরেটরি ইনস্ট্রুমেন্ট কম্পিউটার) সফটওয়্যার ডিজাইনের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত, যা বিশ্বের প্রথম ইন্টারঅ্যাকটিভ ব্যক্তিগত কম্পিউটারগুলোর মধ্যে একটি। ১৯৬৫ সালে তিনি নিজের বাড়িতে লিংক কম্পিউটার ব্যবহার করে ইতিহাস সৃষ্টি করেন এবং এভাবেই বিশ্বের প্রথম হোম কম্পিউটার ব্যবহারকারী হিসেবে স্বীকৃতি পান।



বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর আরও খবর: