নেত্রকোণায় টেকসই প্লাস্টিক ব্যবহারের উপর আলোচনা সভা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন | পরিবেশ ও জলবায়ু

গতকাল নেত্রকোণার পাবলিক হলে একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি ও অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি পরিবেশ অধিদপ্তর ও জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থা (UNIDO)-র যৌথ উদ্যোগে এবং ঢাকাস্থ নরওয়েজিয়ান দূতাবাসের সহায়তায় পরিচালিত পরিচ্ছন্নতা ও গণসচেতনতা কার্যক্রমের অংশ। এই কর্মসূচি “বাংলাদেশে টেকসই প্লাস্টিক ব্যবহারের একীভূত পদ্ধতি ও সামুদ্রিক আবর্জনা প্রতিরোধ” প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোণার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) রফিকুজ্জামান। এর আগে সকালে নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস তরুণ পরিবেশক স্বেচ্ছাসেবকদের শপথ পাঠ করান এবং হাতে-কলমে বর্জ্য সংগ্রহ অভিযান উদ্বোধন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রফিকুজ্জামান বলেন, “এই ধরনের উদ্যোগ নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা ও দায়িত্ববোধ গড়ে তুলতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো বিধিনিষেধ কার্যকর করা সম্ভব নয়। আমি বিশ্বাস করি, নেত্রকোণার তরুণ প্রজন্ম টেকসই আচরণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিষ্কার পরিবেশ নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
UNIDO-র জাতীয় বিশেষজ্ঞ এস. এম. আরাফাত বলেন, প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় ৩টি মূলনীতি—হ্রাস (Reduce), পুনঃব্যবহার (Reuse), ও পুনঃচক্রায়ন (Recycle)—অত্যন্ত জরুরি। কক্সবাজারের উদাহরণ দিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে নেত্রকোণার তরুণরাও শহরের নদীঘেঁষা এলাকাগুলোয় দূষণ হ্রাসে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন IMED-এর পরিচালক ও অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জনাব কামাল হোসেন তালুকদার বলেন, “প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কারে তরুণ সমাজকে সক্রিয় হয়ে শুধু নিজেরাই এগিয়ে আসতে হবে না, বরং অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করতে হবে।”
স্থানীয় পরিবেশবাদী সংস্থা বারসিক (BARCIK)-এর সমন্বয়কারী ওয়াহিদুর রহমান জানান, শুধু রাজনৈতিক বক্তব্যে নয় তরুণ শিক্ষার্থীরা দেয়ালে চিত্রকর্ম ও গ্রাফিতির মাধ্যমে একটি সবুজ ও পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশের স্বপ্ন তুলে ধরেছে, যা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই প্রশংসা করেছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাতিন তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, “তরুণদের এই উদ্যম ভবিষ্যতের জন্য একটি পরিবেশবান্ধব উত্তরাধিকার গড়ে তুলবে।”
এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আনন্দ বাজার, নগরা ব্রিজ ও মুক্তারপাড়া এলাকা থেকে প্রায় ৮০০ কেজি একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।