‘কইলজা খুলি হালায়্যুম’— শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে বিএনপির সাবেক এমপি

 প্রকাশ: ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ০১:১৩ অপরাহ্ন   |   রাজনীতি

‘কইলজা খুলি হালায়্যুম’— শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে বিএনপির সাবেক এমপি

কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. শামছুল ইসলামকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা আবদুল গফুর ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর থেকে এ ঘটনার ১ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের এক একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।

অডিও রেকর্ডে আবদুল গফুর ভূঁইয়াকে উত্তেজিত কণ্ঠে বলতে শোনা যায়, ‘একজন সংসদ সদস্যকে আপনি অপমান করতে পারেন না। আমি আপনার অফিসে এসে আপনাকে অপমান করবো। আপনার কত বড় কইলজা (কলিজা) হয়েছে আমি দেখমু আপনাকে। আপনাকে কে এখানে বসিয়েছে, তার কইলজা খুলি হালায়্যুুম (খুলে ফেলবো), আপনার কইলজাও খুলমু। বেয়াদবির একটা সীমা আছে। একটা টোকাইর ইয়া নিছেন আপনি। হে চাকুরি করে এখানে, টোকাই।’ঘটনার পর বোর্ড চেয়ারম্যানের বিশেষ অনুরোধে ড. মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীন সভাপতি পদ থেকে ১৯ মে অব্যাহতি নেন। ২০ মে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা আবদুল গফুর ভূঁইয়া নিজেই ভোলাইন বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি হন। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. শামছুল ইসলাম বলেন, নাঙ্গলকোটের একটি স্কুলের এডহক কমিটি নিয়ে তিনি আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এর চাইতে বেশি কিছু বলতে চাই না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৮ মে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারের বড় ভাই ড. মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীন শিশিরকে ভোলাইন বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি হিসেবে সুপারিশ করেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক। সে হিসেবে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান তা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে পাঠান।

বিষয়টি জানার পরপরই সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভূঁইয়া ফোনে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও নানা হুমকি দেন। পরদিন সশরীরে বোর্ডে গিয়ে সহযোগী নিয়ে চেয়ারম্যানকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে গফুর ভূঁইয়া নাঙ্গলকোটে বিএনপির রাজনীতির কবর রচনা করেছেন। ১৯ মে তিনি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে ফোনে গালমন্দ করার পর ২০ মে সশরীরে বোর্ড অফিসে গিয়ে চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত করেছেন। ওই দিনই প্রফেসর মো. শামছুল ইসলাম ফোনে আমার ভাই ড. মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীনকে ভোলাইন বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার জন্য মিনতি জানান। চেয়ারম্যানের সম্মানার্থে ওই দিনই তিনি অব্যাহতি নেন।

অডিওর বিষয়ে আবদুল গফুর ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এগুলো আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার। অডিওটি এডিট করা। এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না, বলে তিনি মোবাইল সংযোগ কেটে দেন।’

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন বলেন, বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাবেক এমপির অডিও ভাইরাল হওয়া নিয়ে এখনই মন্তব্য করার সুযোগ নেই। তবে বিষয়টি দুঃখজনক। 


রাজনীতি এর আরও খবর: